কবিতা
আঙিনা সাজাই ফলদ সম্ভারে
মোছলেহ উদ্দিন সিদ্দিকী
বাংলা- আমার মা,
কখনো ভাবি ... এযে অপ্সরা! দারুণ সাহসী নারী!
বৈশাখে তার রুদ্র রূপ, ফাগুনে ভরা আগুনে আঁচল,
শরতে শান্ত দগিন্ত জুড়ে অঘ্রাণে বাজে ফসলের সুর।
কাটিয়ে শীতের শুভ্র কুয়াশা, আমের মুকুল উঁকি দিয়ে রয়
বিকশিত হয় কাঁঠালের কুঁড়ি।
মাগো! এতো রূপ কেমন করে পাও!
ঋতুচক্রের নাগরদোলায় নিজেকে সাজাও
ফুলে ফলে অঙ্গ ভরে নাও,
কী মায়ায় ডাকো যতনে সাদরে...
তোমার কোলেতে হামাগুড়ি দিয়ে
বেড়ে উঠে শিশু, বৃক্ষ-লতার আদরে আদরে...।
অবশেষে মধুমাসে শাবকের ঠোঁট রাঙাও রসে
ফলদ সরসে।
কিশোরীর ঠোঁটে কতো ছড়া উঠে...
জাম-জামরুল, আতা-লিচু-কুল,
কলা-কদবেল, আরো নারিকেল,
পেঁপে-আনারস, কতোনা সরস,
তেঁতুল আর তাল, করেছে বেতাল
টক্-ঝাল্ ঝাল্-টক্ - কতো সখ!
প্রচলিত ফল, কতো ঝলমল
অপ্রচলিত তাই, যেনো না হারাই
বিলুপ্ত খোঁজে ফিরে যেনো পাই!
কী ঐর্শ্বয্য তোমার জননী,
তুষ্ট করিছো, পুষ্ট করিছো, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার দেহখানি।
সবাই তুলিছে ধ্বনি
করিছে কাব্য, ধরিছে স্লোগান
দেশি ফল বেশি খান।
আমি বলি, খাবেন কি করে !
কখনোকি পড়ে মনে!
একটি চারা উঠে ছিলো বেড়ে তোমার হাতের আদরে ?
তোমার বাড়ির আঙিনা বিরান; পড়শীর ছায়া ঘেরা,
তোমার ছাদটি খাঁ খাঁ রোদ্দুর; পড়শীর ছাদ বাগানে শীতল
ফল আর ফল
নানা রঙে- নানা রূপে- কতো ঝলমল...
বেশ্তো বলো- “বাংলা, আমার মা!”
তারি জন্য মিছিল স্লোগানে পিছ্পা থাকিনা।
ফলের মেলায় আসিয়া বেড়াতে করিতো চাষের পণ
শুধু চারা রোপণের কাজটি সারিতে পিছায় দুষ্টু মন।
আমি বলি... !
বাংলা এখন আর কারোনা তোমার আমার মা!
মায়ের অঙ্গ সাজতে কারো আহ্বান লাগেনা।